বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : সৌদিতে আরও ২ লাখ নারীকর্মী পাঠাবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিশাল সংখ্যক এই নারী কর্মীদের সঙ্গে তাদের নিকট আত্মীয়রা বিভিন্ন পেশায় সৌদি যেতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। বুধবার সকালে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন নারীদের নিরাপত্তার কারনে সৌদিতে নারী কর্মী পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে সেখানে বাংলাদেশ কেন নারীদের সৌদিতে পাঠাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেও নারীরা নির্যাতিত হয়। তবে সৌদিতে নারীদের নানাভাবে হয়রানির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আমাদের কাছে আসে না। আর একশ’ জন নারী একটি দেশে কাজ করলে তার মধ্যে একজন বা দু’জনের সমস্যা হতেই পারে। তবে এটা নিয়েও আমরা কথা বলেছি। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তার বিষটিকে গুরুত্ব দিয়েই আলোচনা হয়েছে। আর নারী কর্মীদের সঙ্গে এখন থেকে তার স্বামী কিংবা ভাই সৌদিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। একারনে নির্যাতন বন্ধ হবে বলেও আমরা মনে করছি।
২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর পাশ হওয়া অভিবাসী আইনের আওতায় বিদেশে কর্মী প্রেরণের আগে অভিবাসী কর্মীর নিবন্ধন ও স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করে কতজন শ্রমিক বিদেশে গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আইনের আওতায় নিবন্ধনের বাইরে কোন কর্মী বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। অভিবাসী সব কর্মী নিবন্ধন করেই বিদেশে গেছেন। তবে দেশে আসার পর যেহেতু তারা আর কোনো যোগাযোগ করেন না তাই কতজন দেশে ফিরে আসে তার হিসাব রাখা সম্ভব হয়না।
মন্ত্রী জানান, শুধু নারী শ্রমিকই নয় এখন থেকে অন্যান্য পেশাতে পুরুষ শ্রমিকও নেবে সৌদি। সম্প্রতি সেদেশ সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নারী এবং পুরুষ শ্রমিক পাঠানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেন জানান তিনি। নারী শ্রমিকদের সঙ্গে নিকট আত্মীয় বলতে কারা যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, স্বামী , ভাই বা ঐ নারী যাকে নির্ধারণ করবে সেই ব্যক্তিই তার সঙ্গে যেতে পারবে। তবে গৃহকর্মী হিসেবে নারীর সঙ্গে যাওয়া এই আত্মীয়কে কাজ করতে হবে অন্য কোনো শহরে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন পেশায় এখন থেকে দক্ষ পুরুষ কর্মীও সৌদিতে যেতে পারবেন। বিশেষ করে নারী গৃহকর্মী ছাড়াও আরো ১২ টি ক্যাটাগরিতে পুরুষ কর্মী নেবে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়। ডাক্তার, নার্স, প্রকৌশলী, ড্রাইভার, মালি, গার্ড, সুপারভাইজার এসব পদেও পুরুষ কর্মী নিতে চায় তারা। কুড়িগ্রামের ছিটমহলের দরিদ্র নারী ও পুরুষদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকেও বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে জর্ডানে কাজ করার জন্য পাঠানো হবে বলেও সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রী। বিভিন্ন ছিটমহল থেকে প্রথম পর্যায়ে একশ’ জনকে বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়।
২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে শতকরা ৩০ ভাগ বেশি শ্রমিক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গেছেন বলে জানান মন্ত্রী। ২০১৫ সালে বিভিন্ন দেশে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক বিদেশ গেছেন। এরমধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল এক লাখ তিন হাজার ৭০৭ জন। ২০১৫ সালে রেমিটেন্স এসেছে ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ইউএস ডলার।